সমুদ্রের বুকে তোমার হাত
ভালোবাসা কেবল দু’জন মানুষের মেলবন্ধন নয়, সেটি হয়ে ওঠে প্রকৃতির সঙ্গেও এক অন্তরঙ্গ কথোপকথন। এই গল্পে অয়ন আর শিউলির নতুন সম্পর্ক খুঁজে নেয় সমুদ্রের বুকে, মৌসুনি দ্বীপের রূপকথার মতো সৌন্দর্যের মাঝে।
চাঁদের আলো, ঢেউয়ের ছন্দ, আর নীরবতার গভীরতায় জন্ম নেয় এক নতুন প্রতিশ্রুতির শুরু।
অচেনা থেকে আপন
শিউলি আয়নার সামনে বসে ছিল, কিন্তু আজ তার চোখে-মুখে সেই নতুন বউয়ের উজ্জ্বলতা নেই—বরং আছে এক ধরনের অচেনা কৌতূহল আর লাজুক দ্বিধা। বিয়ের পর এই প্রথম সে একা ঘরে বসে নিজেকে সাজাচ্ছে। কপালে সিঁদুরের সরু রেখা, কানের দুল হালকা দুলছে, আর চুলে গুঁজে রাখা তাজা গাঁদা ফুলের গন্ধ ঘরে ছড়িয়ে আছে। তবু মনে হচ্ছিল, এই সাজ যেন শুধু বাহ্যিক, ভিতরে ভিতরে সে এখনও নিজেকে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারেনি।

বিয়ে হয়েছে মাত্র এক সপ্তাহ আগে—পরিচয়ও খুবই কম দিনের। সেই পরিচয়ও হয়েছিল অয়নের দিদি মধুমিতার মাধ্যমে।
মধুমিতা একদিন শিউলির বাড়িতে এসে বলেছিলেন—
“ছেলেটা সরকারি চাকরি করে, শান্ত স্বভাবের, সংসার করতে জানে। তুমি যদি রাজি থাকো, আমি সব ব্যবস্থা করব।”
শিউলি তখন চুপ করে ছিল। তার মন বলছিল, একেবারে অচেনা একজন মানুষের সঙ্গে বাকি জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত কি এত সহজে নেওয়া যায়? কিন্তু পরিবারের সম্মতি, আর মধুমিতার আন্তরিক আশ্বাসে সে রাজি হয়েছিল।
বিয়ের দিন সবকিছু যেন এক ঝড়ে কেটে গিয়েছিল। ফুল, আলো, অতিথি, গানের শব্দ—সব মিলিয়ে তাদের দুজনের ব্যক্তিগতভাবে কথা বলার সুযোগই হয়নি। বিয়ের প্রথম রাতেও তারা শুধু ভদ্র হাসি বিনিময় করে, কয়েকটা প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করেছিল—
“তুমি কি চা খাবে?”
“এখানকার খাবার কেমন লাগছে?”
এমন কিছু কথা, যা শুধু সৌজন্যবশত বলা হয়।
এরপরের দিনগুলোতেও তাদের মধ্যে দূরত্ব বজায় ছিল। শিউলি রান্নাঘরে ব্যস্ত থাকত, আর অয়ন সকালবেলা বেরিয়ে সন্ধ্যায় ফিরত। ঘরে ফিরেও দু’একটা সাধারণ আলাপ, তারপর চুপচাপ রাতের খাবার খাওয়া।
কিন্তু মধুমিতা দিদি তাদের এই দূরত্ব দেখে চুপ করে থাকেননি। তিনি খুব ভালোভাবেই জানতেন, একে অপরকে জানার জন্য সময় লাগে, আর সেই সময় পেতে হলে ভিড় থেকে দূরে যেতে হয়।
একদিন রাতে অয়ন আর শিউলিকে ডেকে বললেন—
“শোনো, আমি আর জামাইবাবু ঠিক করেছি, তোমরা দু’দিনের জন্য কোথাও বেড়িয়ে আসো।”
শিউলি অবাক হয়ে তাকাল, “কোথায়?”
মধুমিতা হেসে বললেন, “মৌসুনি দ্বীপ। শুনেছি একদম নির্জন, সাগরের ধারে, বালুর পথ, নারকেল গাছ… তোমাদের জন্য বুকিং করে দিয়েছি। কাল সকালেই রওনা দেবে।”
শিউলির বুকের ভেতর কেমন যেন ধুকপুক শুরু হল। সমুদ্র সে কখনও দেখেনি—আর এই প্রথমবারই দেখা হতে চলেছে, তাও একেবারে নতুন স্বামীকে নিয়ে।
অয়ন শুধু মৃদু হেসে বলল, “চল, যাই।”
সে হাসিতে এমন কিছু ছিল, যা শিউলির মনে এক অজানা উষ্ণতা ছড়িয়ে দিল—যেন অচেনা মানুষটার ভেতর থেকে আসছে একটা নরম, আপন আলোর আভাস।
মৌসুনির পথে
ভোরের আলো তখনও পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়েনি। আকাশে হালকা ধূসর মেঘ, পাখির ডাক আর দূরের মসজিদের আজানের সুর ভেসে আসছিল। শিউলি তাড়াতাড়ি ব্যাগ গোছাচ্ছিল—মধুমিতা দিদি আগের রাতেই বলে দিয়েছিলেন, “কম জামাকাপড় নিও, সমুদ্রের জায়গা, হালকা পোশাকই ভালো লাগবে।”
অয়ন বেরোনোর আগে দু’কাপ গরম চা এনে দিল।
“চা খেয়ে নাও, তারপর বেরোবো,” সে বলল।
শিউলি কাপ হাতে নিল, কিন্তু চায়ের চেয়ে বেশি নজর গেল অয়নের দিকে। সকালে বেরোনোর তাড়া থাকলেও তার মুখে কোনো ক্লান্তি নেই—বরং চোখে কেমন এক অদৃশ্য আনন্দ, যেন এই সফরটা সে নিজের মতো করে উপভোগ করবে।
ট্রেনে যাত্রা শুরু হল। জানালার ধারে বসে শিউলি বাইরের দৃশ্য দেখছিল—সবুজ ধানের ক্ষেত, কুয়াশা ভেজা গাছ, মাঝেমধ্যে ছোট্ট স্টেশন।
“তুমি আগে কোথাও ঘুরতে গেছ?” অয়ন জিজ্ঞেস করল।
“দূরে না… শুধু কাছেপিঠে, পরিবারের সাথে। সমুদ্র তো এবারই প্রথম দেখতে যাচ্ছি,” শিউলি একটু লাজুক গলায় উত্তর দিল।
অয়ন মুচকি হেসে বলল, “তাহলে আজ তোমাকে সমুদ্র নিজের মতো করেই স্বাগত জানাবে।”
স্টেশন থেকে নেমে ভ্যানগাড়িতে চেপে বসতেই বাতাসে নুনের গন্ধ পাওয়া গেল। শিউলি নাক টেনে বলল, “এ কেমন গন্ধ?”
“এটাই সমুদ্রের ডাক,” অয়ন বলল, “এখনো তুমি সমুদ্র দেখোনি, কিন্তু সে তোমাকে চিনে ফেলেছে।”
ভ্যান থেকে নেমে তারা পা রাখল নৌকোয়। নদীর জল হালকা দুলছে, দূরে জোয়ারের শব্দ ভেসে আসছে। নৌকা মাঝপথে পৌঁছালে বাতাস আরও জোরে বইতে লাগল, শিউলির আঁচল উড়ে গিয়ে অয়নের হাতে লেগে গেল। সে ধীরে আঁচলটা শিউলির কাঁধে গুঁজে দিয়ে বলল, “সমুদ্রের আগে বাতাসই তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে।”
শিউলি কিছু বলল না, শুধু হালকা হেসে চোখ নামিয়ে নিল।
নৌকা থেকে নামতেই মৌসুনি দ্বীপের দৃশ্য যেন চোখে ধরা দিল—সোনালি বালির বিস্তীর্ণ চাদর, দূরে খেজুরগাছের সারি, আর তার ওপারে নীলাভ সাগর। ঢেউয়ের শব্দ যেন হৃদস্পন্দনের মতো একটানা বাজছে।
রিসর্টটা ছোট কিন্তু একেবারে ছবির মতো সুন্দর। বাঁশের তৈরি বারান্দা, চারপাশে বালির বাগান, আর সামনে সাগরের অবিরাম দৃশ্য।
শিউলি বারান্দায় দাঁড়িয়ে দূরের সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রইল—হৃদয় যেন ধীরে ধীরে এক অপরিচিত ছন্দে নাচছে।
অয়ন পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল,
“প্রথমবার সমুদ্র দেখতে কেমন লাগছে?”
শিউলি ধীরে ধীরে উত্তর দিল,
“মনে হচ্ছে, আমি যেন বহুদিন ধরে এর অপেক্ষায় ছিলাম… আর আজ ও আমাকে নিজের করে নিল।”
প্রথম বিকেল
দুপুরের খাবারের পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু শিউলির মন স্থির থাকতে পারল না। বারান্দা থেকেই যে সমুদ্র দেখা যায়, তার ঢেউয়ের ডাক যেন ক্রমশ জোরে বাজছে কানে।
অয়ন তখন হালকা রঙের হাফশার্ট পরে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল, হাতে নারকেলের জল।
“চলো, বিকেলের আলোতে সমুদ্র অন্যরকম লাগে,” সে বলল।
শিউলি হালকা রঙের সুতির শাড়ি পরে বেরোল, মাথায় খোঁপা, কপালে ছোট্ট টিপ—অয়নের চোখ অনিচ্ছা সত্ত্বেও কয়েক সেকেন্ড আটকে রইল।

সৈকতে পৌঁছাতেই সোনালি বালির ওপর পায়ের ছাপ পড়তে শুরু করল। ঢেউ এসে ছুঁয়ে দিয়ে ফিরে যাচ্ছে—আবার নতুন ছাপের জন্য জায়গা করে দিচ্ছে।
শিউলি খালি পায়ে বালিতে হাঁটতে হাঁটতে বলল,
“এমন শান্তি আগে কখনো পাইনি।”
অয়ন উত্তর দিল, “সমুদ্র তোমার মনটাকেও ধুয়ে দিচ্ছে মনে হয়।”
দূরে কিছু মৎস্যজীবী নৌকা টেনে আনছে, কিন্তু সেই শব্দও যেন ঢেউয়ের গর্জনের ভেতর মিলিয়ে যাচ্ছে। হালকা বাতাস শিউলির চুল উড়িয়ে দিচ্ছিল—অয়ন হাত বাড়িয়ে একগোছা চুল কানের পেছনে সরিয়ে দিল।
শিউলি অবাক হয়ে তাকাল, তারপর চোখ নামিয়ে ফেলল।
একটু পরে দুজনই নীরব হয়ে বসে পড়ল বালিতে, ঢেউয়ের দিকে মুখ করে। সূর্য তখন ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে, আকাশ রঙ বদলাচ্ছে—কমলা, লাল, বেগুনি…
অয়ন হঠাৎ বলল,
“তুমি জানো, আমি কখনো ভাবিনি এমন কাউকে পাশে পাব, যার সঙ্গে নিঃশব্দও এত সুন্দর লাগবে।”
শিউলির গাল লাল হয়ে উঠল, কিন্তু ঢেউয়ের শব্দে তার মৃদু হাসি যেন হারিয়ে গেল।
হঠাৎ এক বড়ো ঢেউ এসে দুজনের পা ভিজিয়ে দিল। শিউলি চমকে উঠল, কিন্তু অয়ন হাত ধরে বলল, “ভয় পেও না, এটা অভ্যর্থনা।”
সে হাত ছাড়ল না, আর শিউলিও আর ছাড়াতে চাইল না।
তাদের মাঝে তখন শুধু ঢেউয়ের ছন্দ আর সূর্যাস্তের উষ্ণ রঙ—যেন পৃথিবীর বাকি সবকিছু মিলিয়ে গেছে এই এক মুহূর্তে।
চাঁদের আলোয় মৌসুনি
সন্ধের পর সমুদ্রের রঙ যেন আরও গভীর হয়ে উঠেছিল। রিসর্টের আলো একপাশে ম্লান, আরেকপাশে উন্মুক্ত সৈকত—চাঁদের আলোয় স্নান করছে পুরো দ্বীপ। বাতাসে হালকা শীতলতা, যেন সমুদ্রের নিঃশ্বাসে ভরে আছে চারপাশ।
অয়ন শিউলিকে নিয়ে হাঁটতে বেরোল। দু’জনেই নীরব—কিন্তু সেই নীরবতা ভারী নয়, বরং এক অচেনা সুরের মতো, যেটা দুজনের মনের ভেতরেই বাজছে।
সৈকতের ওপর চাঁদের আলো পড়েছে যেন রুপোর চাদর। ঢেউ ভাঙার শব্দে মনে হচ্ছিল, চাঁদ যেন নিজেই গান গাইছে।
শিউলি মুগ্ধ চোখে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে বলল,
“এমন দৃশ্য আমি শুধু সিনেমায় দেখেছি… ভাবতেই পারিনি একদিন নিজে এভাবে দেখব।”
অয়ন মুচকি হেসে বলল,
“সিনেমায় হলে অভিনয় থাকত, কিন্তু এখানে সব সত্যি।”
শিউলি একটু চুপ করে অয়নের দিকে তাকাল। সেই দৃষ্টির ভেতর অচেনা মানুষটাকে যেন নতুন করে চিনে নেওয়ার চেষ্টা ছিল।
অয়ন আস্তে করে তার হাত ধরল। শিউলি হাত ছাড়াল না, শুধু হালকা কাঁপা কণ্ঠে বলল,
“এত দ্রুত কেমন করে কাছাকাছি আসা যায়?”
অয়ন উত্তর দিল না, শুধু আঙুলের ফাঁক গুঁজে দিল তার আঙুলের ফাঁকে।

ঢেউ এসে দুজনের পা ভিজিয়ে দিচ্ছিল বারবার, যেন প্রতিটি ঢেউ তাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে—”তোমরা একসাথে থাকবে।”
একটু দূরে ভাঙা নৌকার পাশে বসে পড়ল দুজনে। চারপাশে নির্জনতা, শুধু সমুদ্র আর চাঁদ।
অয়ন শিউলির চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমাদের বিয়ে পরিবারের ইচ্ছেতে হয়েছে, এটা সত্যি। কিন্তু তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে, এ বিয়েতে হয়তো ভাগ্যেরও এক গোপন পরিকল্পনা ছিল।”
শিউলির চোখ চিকচিক করে উঠল চাঁদের আলোয়। সে ধীরে উত্তর দিল,
“তাহলে আমি ভাগ্যের সেই উপহার হতে চাই, যেটা তোমার জীবন ভরে রাখবে।”
হঠাৎ এক ঝলক বাতাস শিউলির আঁচল উড়িয়ে দিল। অয়ন সেটা সামলে দিতে গিয়ে হঠাৎ বুঝল, দুজনের মুখ কতটা কাছে এসে গেছে। শিউলি চোখ নামিয়ে নিল, কিন্তু ঠোঁটে মৃদু হাসি খেলে গেল।
চাঁদ তখন সমুদ্রের বুকে ভেসে উঠেছে পুরোপুরি—সেই আলোয় দুজনের নীরবতা, দূরত্ব মুছে ফেলা হাত, আর এক নতুন সম্পর্কের জন্ম—সবই যেন এক চিরকালীন কবিতায় রূপ নিল।
সমুদ্রের প্রতিশ্রুতি
রাত কেটে ভোর যখন ফুটল, সমুদ্র যেন নতুন করে জন্ম নিল। আকাশ তখনো গোলাপি, ঢেউগুলো রুপোলি আভায় ঝলমল করছে। দূরে কিছু জেলে তাদের নৌকা সমুদ্রে নামাচ্ছে, অথচ সেইসব শব্দও যেন ভোরের কোমলতার ভেতর মিশে যাচ্ছিল।
শিউলি বারান্দায় দাঁড়িয়ে সমুদ্র দেখছিল। হাওয়ায় চুল এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল, চোখে এখনো ঘুমের আবেশ। অয়ন পেছন থেকে এসে তার পাশে দাঁড়াল, হাতে এক কাপ গরম চা।
“আজ আমাদের শেষ সকাল এখানে…” অয়ন নরম গলায় বলল।
শিউলি হালকা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
“হ্যাঁ, কিন্তু মনে হচ্ছে এই কয়েকটা দিনে আমি যেন তোমায় বহুদিন ধরে চিনি। হয়তো আসলেই সমুদ্র মানুষকে খুব কাছাকাছি টেনে আনে।”
অয়ন কাপটা তার হাতে দিয়ে বলল,
“আমাদের গল্প হয়তো শুরু হয়েছিল অচেনা মানুষ হিসেবে, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে—তুমি ছাড়া আমি আর নিজের গল্প চালিয়ে নিতে পারব না।”
শিউলি চায়ের ভেতর থেকে চোখ তুলে তার দিকে তাকাল। ঢেউয়ের মতো ভেসে বেড়ানো দৃষ্টির ভেতর কেমন এক আশ্বাস ছিল।
“তাহলে একটা প্রতিশ্রুতি দাও,” সে ফিসফিস করে বলল।
অয়ন এগিয়ে এসে শিউলির হাত নিজের হাতে নিয়ে বলল,
“যে প্রতিটি ভোর আসবে, আমি তোমার সঙ্গে দেখে যাব। ঝড় আসুক বা ঢেউ ভেঙে পড়ুক, তোমার হাত কখনো ছাড়ব না।”
শিউলির চোখে অশ্রু চিকচিক করল, কিন্তু সেই অশ্রু যেন আনন্দের ঝলকানি।
“আমিও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমি শুধু স্ত্রী হয়ে নয়, বন্ধু হয়ে, সঙ্গী হয়ে—তোমার পাশে থাকব সবসময়।”
হঠাৎ এক বড়ো ঢেউ এসে সৈকত ভিজিয়ে দিল, যেন প্রকৃতিও তাদের প্রতিশ্রুতিকে সীলমোহর দিয়ে দিল।
তারপর দুজন হাত ধরে সৈকতে হাঁটতে লাগল। সূর্যের আলো ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে, আকাশ থেকে সমুদ্র পর্যন্ত এক অপূর্ব সোনালি পর্দা। তাদের পায়ের ছাপ পড়ছে পাশাপাশি, যেন সেই ছাপগুলো বলছে—এখন থেকে তারা আর আলাদা নয়, চিরকালের জন্য একসাথে।
মৌসুনির সেই নির্জন দ্বীপ, সমুদ্রের ঢেউ আর চাঁদের আলো—সবই সাক্ষী হয়ে রইল এক নতুন দাম্পত্যের, এক নতুন প্রেমের জন্মের।
এভাবেই দুজনের হৃদয়ে বাঁধা পড়ল এক অমোঘ বন্ধন—
সমুদ্রের প্রতিশ্রুতি। 🌊❤️