স্বাধীনতার উৎসব
|

“স্বাধীনতার উৎসব “

ভোর ভোরে ফুল তোলার প্রস্তুতি

স্বাধীনতা দিবসের সকাল মানেই ছিল এক আলাদা উত্তেজনা। সূর্য ওঠার আগেই আমরা ঘুম থেকে উঠে পড়তাম, কারণ স্কুলে পতাকা উত্তোলন আর প্রভাতফেরির জন্য প্রচুর ফুল লাগবে।
মা গামছা হাতে দরজায় দাঁড়িয়ে বলতেন,
“তাড়াতাড়ি বেরোও, নয়তো শিশিরে ভেজা ফুলগুলো ঝরে যাবে।”

হাতে বাঁশের ছোট্ট ঝুড়ি নিয়ে আমরা ভাইবোন ও পাড়ার বন্ধুরা দৌড়ে যেতাম বাগানের দিকে। চারপাশ তখনো কুয়াশায় ঢাকা, দূরে গাছের পাতায় শিশিরের ফোঁটা চিকচিক করছে।
গোলাপের লাল, শিউলির সাদা-কমলা, জবার রক্তিম রঙ—প্রতিটি ফুল যেন স্বাধীনতার রঙে রঙিন। আমরা যত্ন করে ফুল তুলে ঝুড়িতে সাজিয়ে রাখতাম, আর ফাঁকে ফাঁকে হাসি-ঠাট্টা চলত অবিরাম।

পথে ফেরার সময় ঝুড়ি ভর্তি ফুলের সুবাসে সকালটা যেন আরও উৎসবমুখর হয়ে উঠত। মনে হতো—এই ফুলগুলো আজ তেরঙা পতাকার নিচে ছড়িয়ে দিয়ে আমরা যেন নিজের হাতে স্বাধীনতার গর্বকে রঙে রঙে সাজিয়ে দেব।

স্কুলে পৌঁছে ফুল সাজানোর ব্যস্ততা

ফুলে ভর্তি ঝুড়ি হাতে নিয়ে যখন আমরা স্কুলের গেট পেরোতাম, তখনই কানে আসত ঢোল-করতালের তালে তালে শিশুদের হাসি-আনন্দের শব্দ। মাঠের মাঝখানে বাঁশের মজবুত খুঁটি পুঁতে রাখা হয়েছে—যেটিতে কয়েক ঘণ্টা পর তেরঙা পতাকা উড়বে গর্বের সাথে।

পতাকা উত্তোলনের মঞ্চের চারপাশে ইতিমধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা ব্যস্ত—কেউ ফুলের মালা গেঁথে দিচ্ছেন, কেউ মঞ্চে চট পেতে সাজাচ্ছেন। আমরা ছোটরা এগিয়ে গিয়ে ঝুড়ি খুলে ফুল সাজানো শুরু করতাম।
শিউলির কোমল পাপড়ি, গোলাপের সুগন্ধ, জবার উজ্জ্বল লাল—সব মিলিয়ে মঞ্চের চারপাশ যেন স্বাধীনতার রঙে রঙিন হয়ে উঠত।

বন্ধুরা মিলে মালা গাঁথার ফাঁকে ফাঁকে গল্প চলত—কে কত বড় ফুল তুলেছে, কার ঝুড়িতে সবচেয়ে সুন্দর শিউলি আছে, এসব নিয়ে হাসাহাসি। শিক্ষকরা মাঝে মাঝে এসে বলতেন,
“দেখো, সুন্দর করে সাজিও, আজকের দিনটা কিন্তু সবার জন্য গর্বের।”

পাশেই কিছু বড়রা পতাকা তোলার দড়ি পরীক্ষা করছে, মাইক চেক হচ্ছে, আর স্কুলের সামনে ভিড় জমতে শুরু করেছে গ্রামের মানুষদের। ফুল সাজানোর কাজ শেষ হলে আমরা একটু দূরে দাঁড়িয়ে আমাদের সাজানো মঞ্চ দেখে মনে মনে গর্ব অনুভব করতাম—কারণ আমরা জানতাম, এই ফুলগুলোই আজ স্বাধীনতার প্রতীক তেরঙা পতাকার সাথে মিশে যাবে।

প্রভাতফেরির উচ্ছ্বাস

ফুল সাজানো শেষ হতেই মাঠে আবার নতুন উৎসাহের ঢেউ উঠল—শুরু হতে চলেছে প্রভাতফেরি
হেডস্যার হাতে বাঁশি নিয়ে মাইকে ঘোষণা করলেন,
“সবাই লাইন করে দাঁড়াও, পতাকা হাতে প্রস্তুত হও।”

আমরা সারি বেঁধে দাঁড়ালাম—প্রত্যেকের হাতে ছোট্ট তেরঙা পতাকা। সকালের ঠান্ডা হাওয়া সেই পতাকার কাপড়ে দুলুনি এনে দিচ্ছে, আর আমাদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে গর্ব আর আনন্দের মিশ্র হাসি।

বাঁশির তীক্ষ্ণ শব্দ শোনা মাত্রই পা ফেলতে ফেলতে শুরু হলো যাত্রা। গ্রামের কাঁচা রাস্তা, দুই পাশে ধানের ক্ষেত, মাঝেমাঝে ফুটন্ত সোনালি সর্ষে ফুলের গন্ধ—সব মিলিয়ে সকালের পরিবেশ যেন আরও দেশপ্রেমে ভরে উঠল।

সবার কণ্ঠে একসাথে স্লোগান—
“বন্দে মাতরম!”
“ভারতমাতা কি জয়!”
প্রতিধ্বনি কেবল আমাদের কানে নয়, গ্রামের প্রতিটি দেওয়াল, গাছ আর আকাশে গিয়ে ধাক্কা খাচ্ছে।

পথে ছোট ছোট বাচ্চারা আমাদের দেখে হাত নাড়ছে, কেউ কেউ দৌড়ে এসে স্লোগানে মিশে যাচ্ছে। মাটির রাস্তা ধুলো উড়ছে, কিন্তু সেই ধুলোতেও যেন এক অদ্ভুত গর্বের গন্ধ।

প্রভাতফেরি শেষ হতেই সবাই আবার স্কুলে ফিরল—ক্লান্ত হলেও মন ভরা আনন্দ আর উচ্ছ্বাস নিয়ে। এখন অপেক্ষা কেবল পতাকা উত্তোলন আর ফুল ছড়ানোর সেই গর্বিত মুহূর্তের।

পতাকা উত্তোলন ও ফুল ছড়ানোর মুহূর্ত

প্রভাতফেরি শেষে সবাই যখন স্কুলের মাঠে ফিরে এল, তখন সূর্য আরও খানিকটা উপরে উঠেছে। নরম রোদ মঞ্চের উপরে পড়ে তেরঙা পতাকার গায়ে যেন সোনালি আভা ছড়িয়ে দিচ্ছে। মাঠ ভর্তি মানুষ—ছাত্র, শিক্ষক, গ্রামের প্রবীণ ও শিশু—সবার চোখ তখন মঞ্চের দিকে নিবদ্ধ।

হেডস্যার মাইকে ঘোষণা করলেন,
“এবার আমরা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য প্রস্তুত হবো।”
তার কণ্ঠে গর্ব আর আবেগের মিশ্র সুর।

জাতীয় সঙ্গীত বাজতে শুরু করতেই সবাই সোজা হয়ে দাঁড়ালাম। এক নিঃশ্বাসে আমরা গাইলাম—
“জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে…”
কণ্ঠে কাঁপন, মনে অনাবিল গর্ব।

ঠিক সেই মুহূর্তে মঞ্চে দাঁড়ানো প্রধান শিক্ষক দড়ি টেনে তেরঙা পতাকা উন্মোচন করলেন। পতাকার গায়ে প্রথম রোদের আলো পড়তেই হালকা বাতাসে সেটা দুলে উঠল—যেন স্বাধীনতার গান গাইছে।

আমরা হাতে ধরা ফুল বাতাসে ছড়িয়ে দিলাম—শিউলির গন্ধ, গোলাপের রঙ, জবার লাল সব মিশে পতাকার নিচে নেমে এল। ফুলগুলো যেন পতাকার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য হয়ে নীরবে মাটিতে পড়ল।

চারপাশে তখন শুধুই করতালি আর স্লোগান—
“ভারতমাতা কি জয়!”
“বন্দে মাতরম!”
শিশুরা আনন্দে লাফাচ্ছে, বড়রা চোখের কোণে জল মুছে নিচ্ছে।

সে মুহূর্তে মনে হচ্ছিল—আমরা সবাই যেন এক সুতোয় বাঁধা, যেখানে ধর্ম, ভাষা, বয়স, কিছুরই বিভাজন নেই—শুধু একটাই পরিচয়, আমরা ভারতীয়।

চিড়া-মুড়ি খাওয়া ও মজার ঘটনাগুলো

পতাকা উত্তোলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর স্কুলের উঠোনে খাবারের আয়োজন ছিল আমাদের জন্য এক বিশেষ আকর্ষণ। বড় বড় ট্রেতে সাজানো চিড়া-মুড়ি, সিদ্ধ ছোলা, বিস্কুট আর লাড্ডু দেখে আমাদের মুখে জল চলে আসত। ছোটরা প্রথমে সামনের দিকে ধাক্কা দিত, বড়রা ধৈর্য ধরে লাইনে দাঁড়াত—যদিও লাইনের নিয়ম অনেক সময় উৎসাহের ঢেউয়ে ভেসে যেত!

আমি হাতে গরম গরম সিদ্ধ ছোলা আর মুড়ি নিয়ে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে গাছতলায় বসে গল্প করতাম। হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই কারো মাথায় দুষ্টুমি চেপে বসত। আমাদের এক বন্ধু প্রতিবারই এমন করত—সে মুড়ির পলিথিনটা চাগলের শিংয়ে ঝুলিয়ে দিত। আর মজার ব্যাপার হলো, চাগল প্রথমে অর্ধেকটা মুড়ি খেত, বাকি অর্ধেক ফেলতে ফেলতে চারদিকে ছুটত। তখন আমরা সবাই পেছন পেছন দৌড়াতাম আর হেসে লুটোপুটি খেতাম।

খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে বাড়ি ফেরার সময়টা ছিল আরেক রকম আনন্দের। পথে যেতে যেতে দেখতাম, প্রতি গ্রামের ক্লাব আর স্কুলের সামনে তেরঙা পতাকা উড়ছে—হালকা বাতাসে পতপত শব্দ করে দুলছে। কোথাও কোথাও তখনো পতাকা উত্তোলন চলছে, স্লোগানের সাথে ঢাক-ঢোলের শব্দ ভেসে আসছে—যেন স্বাধীনতার শক্তি প্রদর্শন করছে।

এ দৃশ্যগুলো চোখে পড়লেই মন ভরে যেত। মনে হতো, গোটা গ্রাম যেন একসাথে উৎসব করছে—বয়স, পেশা বা অবস্থার ভেদাভেদ নেই, সবাই একই আবেগে বাঁধা।

গ্রামের ভিডিও হলে সিনেমা দেখা – স্বাধীনতার দিনের বিশেষ আকর্ষণ

আমাদের গ্রামে তখনো বিদ্যুৎ আসেনি। তাই সিনেমা দেখার জন্য আলোর একমাত্র ভরসা ছিল ভিডিও হল। গ্রামের এক কোণে ছিল একটি ছোট্ট কিন্তু আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো প্রিয় ভিডিও হল। ভেতরে টিনের দেয়াল, বাঁশের বেঞ্চ আর সামনে বড় সাদা পর্দা—এটাই ছিল আমাদের সিনেমা দুনিয়া।

ভিডিও হলে ঢোকার আগে টিকিট কাটতে হতো—টিকিট মানে সাধারণ কাগজের টুকরো, তবু সেটাই আমাদের কাছে ছিল গর্বের চিহ্ন। বাইরে থেকে যখন লাল-সবুজ রঙের পোস্টারে সিনেমার নাম লেখা থাকত, আমাদের চোখে সেই লেখা যেন জাদুর মতো লাগত।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার ছিল ভিডিও হলের মাইকের ঘোষণা। হলের এক কোণে বাঁশের খুঁটির মাথায় বাঁধা থাকত একটি পুরনো মাইকের চোঙ। সেই বাঁশটি ধীরে ধীরে ঘোরানো হতো, যাতে ঘোষণার শব্দ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘোষণার ভেতর থাকত—

“আজ দুপুর একটায় বিশেষ প্রদর্শনী—‘জুরাসিক পার্ক’! সাথে দেশভক্তিমূলক ছবি ‘বর্ডার’! সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।”

এই ডাক শোনামাত্রই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে যেন এক আলাদা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ত।

স্বাধীনতা দিবসে এই ভিডিও হলে দেখানো সিনেমাগুলোও ছিল একেবারে বিশেষ। ‘জুরাসিক পার্ক’ আমাদের চোখ খুলে দিয়েছিল এক নতুন জগতের দিকে, আর ‘বর্ডার’ আমাদের মধ্যে জাগিয়েছিল দেশপ্রেমের অদম্য অনুভূতি। সিনেমা চলাকালীন হলে যখন দেশভক্তি গান বাজত, তখন হল ভর্তি দর্শক একসাথে চিৎকার করে বলত—

“ভারত মাতা কি জয়!”

সেই দিনে বাড়ির লোকও আমাদের কিছু বলত না—পড়াশোনার তাড়া থাকলেও যেন সেদিন আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন ছিলাম। এই স্বাধীনতার স্বাদই ছিল আমাদের শৈশবের সবচেয়ে বড় আনন্দ।

নদীর ধারে নৌকায় পিকনিক – স্বাধীনতার দিনের সোনালি বিকেল

স্বাধীনতা দিবসের সকালে প্রভাতফেরি, পতাকা উত্তোলন, স্কুলের খাবার আর সিনেমা দেখার পর বিকেলটা যেন আরো রঙিন হয়ে উঠত। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শান্ত নদীটা সেদিন আমাদের কাছে হয়ে উঠত উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু।

আমরা বন্ধু-বান্ধব, পাড়া-প্রতিবেশীর কয়েকজন নিয়ে নেমে পড়তাম নদীর ধারে। জল ঝকঝক করে রোদে চকচক করত, হাওয়া এসে মন ভরে দিত এক অদ্ভুত শান্তি আর আনন্দে। নদীর ঘাটে অপেক্ষা করত একটি বড় কাঠের নৌকা, যার মাঝখানে বাঁশের আসন পাতা। মাঝি হাসিমুখে বলত—

“চলুন বাবুরা, আজ তো স্বাধীনতার দিন, আজ নদীটাও আপনারাই নিয়ন্ত্রণ করবেন!”

আমরা চিৎকার-হাসি করতে করতে উঠে যেতাম নৌকায়। শুরু হতো গানের আসর—কেউ দেশাত্মবোধক গান গাইত, কেউ আবার সিনেমার জনপ্রিয় গান গুনগুন করত। মাঝি মাঝেমধ্যে দাঁ থামিয়ে বলত—

“গান তো দারুণ হচ্ছে, এবার একটু হাততালি হোক!”

নৌকা ধীরে ধীরে নদীর মাঝ বরাবর এগিয়ে যেত, আর আমরা নদীর দুই তীরের সৌন্দর্যে হারিয়ে যেতাম। কোথাও ঝোপে পাখির ডাক, কোথাও জেলেদের জাল ফেলার দৃশ্য, আর কোথাও দূরের গাছের ছায়ায় খেলা করছে ছেলেমেয়েরা—সব মিলিয়ে যেন একটা জীবন্ত চিত্রপট।

পিকনিকের জন্য নিয়ে আসা খাবারের মধ্যে ছিল মুড়ি, চানাচুর, ডিম সেদ্ধ, আর ঠান্ডা পানীয়। ছোট ছোট কৌটায় আচার, বিস্কুট, এমনকি কেউ কেউ বাড়ি থেকে বানিয়ে আনা নারকেলের নাড়ুও ছিল। নদীর মাঝখানে দাঁ থামিয়ে সবাই মিলে খাওয়া শুরু করতাম—হাসি, ঠাট্টা, আর খাওয়ার শব্দে পুরো নৌকা ভরে উঠত।

যখন সূর্য ধীরে ধীরে পশ্চিমে হেলে পড়ত, আকাশে কমলা-লাল রঙের ছোঁয়া লাগত, তখন নৌকা ধীরে ধীরে ঘাটের দিকে ফিরত। মনটা কেমন জানি আবেগে ভরে যেত—পুরো দিনটা যেন স্বাধীনতার, আনন্দের আর বন্ধুত্বের এক অমূল্য স্মৃতি হয়ে থাকত।

স্মৃতির পাতায় স্বাধীনতার রঙ

আজ আমরা সত্যিই অনেক বড় হয়েছি—পড়াশোনা, কাজ, দায়িত্ব, সংসার—সব মিলিয়ে জীবনের গতি যেন বদলে গেছে। শৈশবের সেই নির্ভেজাল আনন্দ, বন্ধুত্বের হাসি, আর ছোট্ট ছোট্ট স্বপ্নগুলো আজ কোথাও যেন কাজের চাপে, সময়ের অভাবে চাপা পড়ে গেছে।

chatgpt image aug 15, 2025, 03 12 47 am

এখনো ১৫ই আগস্ট আসে, আমরা পতাকা উত্তোলন করি, জাতীয় সঙ্গীত গাই, কিন্তু সেই শৈশবের শিহরণ—যেটা হৃদয় ভরে দিত এক অদ্ভুত গর্ব আর আনন্দে—সেটা যেন আর পুরোপুরি ফিরে পাই না। এখন সবকিছুর মধ্যে আধুনিকতার ছোঁয়া, অনুষ্ঠান হয় বড় পরিসরে, সাজসজ্জা হয় আরও ঝলমলে, কিন্তু কোথায় যেন সেই আগের দিনের সরলতাটা হারিয়ে গেছে।

তবুও, চোখ বন্ধ করলে এখনো মনে পড়ে যায় ভোরের শিশির ভেজা মাঠ, ফুল তোলার ব্যস্ততা, প্রভাতফেরির উচ্ছ্বাস, স্কুলের ছোলা সেদ্ধ, চিড়া-মুড়ি, গ্রামের ভিডিও হলে সিনেমা দেখা, আর বিকেলের নৌকায় পিকনিক।
এই সবই আমার জীবনের এক অমূল্য সম্পদ, যা হয়তো আজ আর ছুঁয়ে দেখা যায় না, কিন্তু চিরকাল মনের ভেতরে রঙিন ছবির মতো বেঁচে থাকবে—আমার নিজের স্বাধীনতার দিনের গল্প হয়ে।

প্রিয় পাঠক,
স্বাধীনতা দিবসের সকাল মানেই ছিল ভোরে ফুল তোলা, প্রভাতফেরির ঢোলের তালে হাঁটা, আর পতাকা উত্তোলনের গর্বের মুহূর্ত। সময় বদলেছে, আমরা বড় হয়েছি, কিন্তু সেই শৈশবের আনন্দ, সরলতা আর আবেগ কি এখনো মনে আছে?

আজকের এই গল্পে আমরা সেই দিনগুলো আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছি। যদি পড়ে আপনারও ছোটবেলার সেই গল্প মনের গভীরে নাড়া দেয়—তাহলে অনুরোধ রইল, আপনার স্মৃতিটুকু মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না।

চলুন, আমাদের গল্পে আপনার গল্পও যুক্ত করি—যেন স্বাধীনতার এই উৎসব আরও বর্ণময় হয়ে ওঠে।

এই দিনটি ভারতবাসীর কাছে শুধু একটি তারিখ নয়—এটি গর্বের দিন, সম্মানের দিন, আত্মমর্যাদার দিন। স্বাধীনতার জন্য অসংখ্য প্রাণ, অসংখ্য স্বপ্ন, অকল্পনীয় ত্যাগ ও বীরত্বে ভরে আছে আমাদের ইতিহাস।

তাদের রক্তে লেখা রয়েছে স্বাধীনতার নাম—যারা দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেই সকল বীর সন্তানদের প্রতি “গল্পকথা” পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই আমাদের অন্তরের গভীর থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

🙏 তাদের ত্যাগেই আজ আমরা স্বাধীন, তাদের স্বপ্নেই আমরা গড়েছি আমাদের ভবিষ্যৎ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *