“ভবিষ্যতের খুন”
ভবিষ্যতের ফাইল
কলকাতার এক নিস্তব্ধ রাত।
ঘড়ির কাঁটা তখন রাত ১টা ৩৪ মিনিট ছুঁই ছুঁই।
সদ্য বৃষ্টি থেমেছে, বাতাসে ভিজে মাটির গন্ধ।
নিজের অফিসরুমে একা বসে কেস ফাইল ঘাঁটছিলেন গোয়েন্দা ঋদ্ধিমান সেন।
চোখ লালচে, টেবিলে ছড়ানো সিগারেটের শেষ টুকরো আর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া কফির কাপ প্রমাণ দিচ্ছিল— বহুক্ষণ ধরে তিনি জেগে আছেন।
হঠাৎ ডেস্কের উপর রাখা এক মোটা ফাইল তার নজরে এল।
ফাইলের উপর লাল কালিতে লেখা— “Confidential”।
ঋদ্ধিমান ফাইলটা আগে দেখেননি।
অদ্ভুত ব্যাপার হলো, সেটি কে রেখে গেছে তিনি জানেনও না।
ফাইল খুলতেই বুকটা ধক করে উঠল।
প্রথম পাতাতেই স্পষ্ট লেখা—
শিকারীর নাম: সুদীপ মুখার্জি
মৃত্যুর তারিখ ও সময়: আগামীকাল, দুপুর ১২:১৭ মিনিট
হত্যার অস্ত্র: ধারালো ছুরি
হত্যাস্থল: লালবাগ, ৭ নম্বর লেন
ঋদ্ধিমানের কপালে ঘাম জমল।
পাতা উল্টাতেই দেখা গেল ঘটনাস্থলের স্পষ্ট ছবি—
রক্তে ভেজা মেঝে, নিথর পড়ে থাকা দেহ, এমনকি পুলিশের ফরেনসিক রিপোর্ট পর্যন্ত!
সবকিছু একেবারে সত্যি খুনের মতো বিস্তারিত।
কিন্তু… খুনটা তো এখনো ঘটেনি!
তিনি চেয়ারে হেলান দিয়ে ফাইলটা আবার পড়লেন, চোখের পাতা কাঁপছিল।
“এটা কি ভবিষ্যৎ থেকে আসা কোনো প্রমাণ? নাকি কেউ আগে থেকেই খুন সাজিয়ে রেখেছে?”— নিজের মনে বিড়বিড় করলেন তিনি।
এমন সময় বাইরে হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানি।
অফিসের জানালার কাচে এক মুহূর্তের জন্য স্পষ্ট দেখা গেল—
কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে, ঋদ্ধিমানের দিকে তাকিয়ে।
কিন্তু দরজা খুলে বের হতেই চারপাশ ফাঁকা।
শুধু বাতাসে ভেসে আসছিল হালকা ফিসফিস শব্দ,
যেন কেউ অদৃশ্য হয়ে ফিসফিস করছে—
“তুমি থামাতে পারবে না…”
ঋদ্ধিমান কাঁপা হাতে ফাইলটা শক্ত করে বন্ধ করলেন।
তার মাথায় তখন একটাই প্রশ্ন—
আগামীকাল দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে কী হতে যাচ্ছে?
শিকারীর সঙ্গে দেখা
সকালের আলোয় শহর তখনও ভিজে।
রাতের অদ্ভুত ফাইলের রহস্য ঋদ্ধিমানের মাথা থেকে কিছুতেই যাচ্ছিল না।
তাই সকালবেলাই তিনি ছুটলেন লালবাগের ৭ নম্বর লেনে—
যেখানে খুনের রিপোর্টে সময় আর স্থান নির্দিষ্ট করে লেখা ছিল।
ওই গলির এক পুরনো ভাড়া বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকতেন সুদীপ মুখার্জি।
চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, বয়স তিরিশের শেষভাগ,
একজন ছোটখাটো ব্যবসায়ী— কাগজে-কলমে সাধারণ মানুষ।
ঋদ্ধিমান দরজায় নক করতেই ভেতর থেকে খানিকটা বিরক্ত সুরে প্রশ্ন ভেসে এল,
“কে?”
“আমি গোয়েন্দা ঋদ্ধিমান সেন। আপনাকে কিছু জরুরি কথা বলতে চাই।”
দরজা খোলার পর সুদীপের মুখে স্পষ্ট অবাক ভাব।
ভেতরে ঢুকে ঋদ্ধিমান সরাসরি টেবিলে ফাইল রেখে দিলেন।
এক এক করে সব দেখালেন— তার নাম, তার ছবি, আর আগামীকালের মৃত্যুর রিপোর্ট।
সুদীপের চোখ বিস্ফারিত।
মিনিট খানেক চুপচাপ তাকিয়ে থাকার পর হেসে উঠল সে,
“এগুলো সব কী ছেলেমানুষি?
আমি কাল মরব? কার মাথায় এসব কাণ্ডকারখানা ঢুকল?”
ঋদ্ধিমান গম্ভীর গলায় বললেন,
“আমিও জানি না। কিন্তু ফাইলটা যেমনভাবে আমার টেবিলে এসে পড়ল, তাতে এটাকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না।”
সুদীপ উত্তর দিতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই ঘরের ফোনটা বেজে উঠল।
সে ফোন তুলতেই ওপাশ থেকে ভেসে এল ভয়ার্ত এক কণ্ঠস্বর—
“তোমার সময় শেষ হয়ে আসছে… কাল দুপুর ১২টা ১৭ মিনিটে তুমি মরবে। কেউ বাঁচাতে পারবে না।”
সুদীপ কাঁপা হাতে রিসিভার নামিয়ে ফেলল।
মুখ ফ্যাকাশে, গলায় শুকনো স্বর—
“এটা… এটা তো ঠিক একই সময়, যেটা ফাইলে লেখা ছিল!”
ঋদ্ধিমান গভীর দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালেন।
তিনি জানতেন, খেলা এখন শুরু হয়েছে।
সময় খুব কম— আর সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক অদৃশ্য খুনি, যে হয়তো সবকিছু আগেই লিখে রেখেছে।
সময়ের বিরুদ্ধে দৌড়
https://www.gutenberg.org/browse/languages/bnপরদিন সকাল।
আকাশে অদ্ভুত এক চাপা অন্ধকার— যেন দিনের আলোতেও ছড়িয়ে আছে অশনি সংকেত।
গোয়েন্দা ঋদ্ধিমান সেন ঠিক সকাল সাতটাতেই পৌঁছে গেলেন লালবাগের ৭ নম্বর লেনে।
শিকারী সুদীপ মুখার্জি তখন দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে,
চোখেমুখে সারা রাতের ভয়ের ছাপ।
“আপনি কি সারাদিন আমার সঙ্গে থাকবেন?”— ভয়ার্ত গলায় জিজ্ঞেস করল সুদীপ।
ঋদ্ধিমান শান্ত গলায় উত্তর দিলেন,
“যতক্ষণ না সময় পার হচ্ছে, ততক্ষণ আপনাকে এক মুহূর্তও একা রাখব না। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, আজ আপনার চারপাশে যেকোনো মানুষই সন্দেহজনক হতে পারে।”
সকাল ৯টা
সুদীপের অফিসে আসা-যাওয়ার কর্মচারীদের একজন হঠাৎ কটাক্ষ করে বলে বসল—
“কাল পর্যন্ত যার গলায় এত দাপট, আজ দেখি মুখে সব ভয়ের রেখা।”
ঋদ্ধিমান লক্ষ্য করলেন, লোকটার চোখে চাপা রাগের ছাপ।
সকাল ১০টা
এক পুরনো বন্ধু এলো দেখা করতে।
বন্ধুর স্ত্রী নাকি সুদীপের প্রতি ক্ষুব্ধ— কারণ কয়েক বছর আগে এক ব্যবসায়িক চুক্তিতে তাদের বড় ক্ষতি হয়েছিল।
বন্ধু বিদ্রূপ করে বলল,
“তোমার জন্য অনেকের জীবন শেষ হয়ে গেছে, সুদীপ। সময় হলে হিসাব মেটাতেই হবে।”
সকাল ১১টা
রাস্তার মোড়ে এক অচেনা লোক দাঁড়িয়ে ছিল।
ঋদ্ধিমান এগোতেই সে মৃদু হেসে বলল,
“যা হবার, তা হবেই। সবকিছু আগে থেকেই লেখা আছে।”
লোকটার চোখে অদ্ভুত স্থিরতা, যেন ভবিষ্যতের সব কিছু সে আগেভাগেই জানে।
ঋদ্ধিমান প্রশ্ন করতে চাইলে লোকটা হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল।
দুপুর ঘনিয়ে আসছে
ঘড়ির কাঁটা যেন আরও দ্রুত চলছে।
ঋদ্ধিমানের মাথার ভেতর বারবার ঘুরছিল সেই ভয়ঙ্কর সময়— ১২টা ১৭ মিনিট।
সুদীপ বারবার বলছে,
“আমি মরতে চাই না… দয়া করে আমাকে বাঁচান।”
ঋদ্ধিমান জানতেন, এর পিছনে একজন শয়তান মস্তিষ্ক কাজ করছে।
কিন্তু কে?
ব্যবসায়িক শত্রু?
পুরনো বন্ধুর পরিবার?
না কি সেই রহস্যময় অচেনা লোক?
একটা জিনিস তিনি নিশ্চিত বুঝলেন—
সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ততই মৃত্যু এগিয়ে আসছে।
এটা যেন সময় আর মৃত্যুর বিরুদ্ধে এক দৌড়।
আর এর মধ্যে মাত্র আর এক ঘণ্টা বাকি…
খুন নাকি নাটক?
ঘড়ির কাঁটা তখন দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট।
ঘরে অদ্ভুত এক টানটান উত্তেজনা।
সুদীপ একদৃষ্টে দেয়ালের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে, ঠোঁট শুকিয়ে গেছে।
ঋদ্ধিমান পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিটি নড়াচড়া খেয়াল করছিলেন।
“দু’মিনিট বাকি…”— ফিসফিস করে বলল সুদীপ।
তার কণ্ঠে শীতল আতঙ্ক।
ঠিক তখনই—
ঠাস!
এক ঝলক বজ্রপাতের মতো শব্দ, হঠাৎ আলো নিভে গেল।
ঘর অন্ধকার।
তারপরই শোনা গেল এক ভয়ার্ত চিৎকার—
“বাঁচাও!”
অন্ধকার ঘরে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল।
ঋদ্ধিমান দ্রুত টর্চ জ্বালালেন।
টর্চের আলোয় যা দেখা গেল, তাতে সবার বুক হিম হয়ে গেল—
সুদীপ মাটিতে লুটিয়ে আছে, বুক ভিজে গেছে রক্তে।
তার নিথর দেহ ঠিক যেমনভাবে ছবিতে দেখা গিয়েছিল, ফাইলের ভেতরে।
ঘড়িতে সময় তখন— ১২টা ১৭ মিনিট।
সবাই হতবাক।
যেন কপালে লেখা ভবিষ্যৎই সত্যি হলো।
ঋদ্ধিমান হাঁটু গেড়ে সুদীপের শরীর পরীক্ষা করলেন।
তার ঠোঁট শক্ত হয়ে এল।
“এটা… সত্যিই খুন।”
কিন্তু প্রশ্ন হলো—
তিনি তো এক মুহূর্তের জন্যও সুদীপের কাছ থেকে চোখ সরাননি।
তাহলে কীভাবে, কার হাতে ঘটল এই হত্যাকাণ্ড?
হঠাৎ ঘরের ভেতর কেউ বিড়বিড় করে বলল—
“দেখলেন তো? কেউ ভবিষ্যৎ বদলাতে পারে না।”
ঋদ্ধিমান টর্চ ঘুরিয়ে তাকালেন, কিন্তু লোকটা ভিড়ের মধ্যে মিলিয়ে গেছে।
তার মনে একটাই কথা ঘুরপাক খেতে লাগল—
এটা কি সত্যিই একটা খুন,
নাকি পুরো বিষয়টা এক সুপরিকল্পিত নাটক, যার আড়ালে লুকানো আছে এক ভয়ঙ্কর সত্য?
অদ্ভুত সত্য
ঘরের ভেতর হুলস্থুল কাণ্ড।
কারও চোখে ভয়, কারও চোখে বিস্ময়।
কিন্তু গোয়েন্দা ঋদ্ধিমান সেন স্থির দৃষ্টিতে মাটিতে লুটিয়ে থাকা সুদীপের দেহ দেখছিলেন।
এক মুহূর্ত পরই তিনি লক্ষ্য করলেন— কিছু একটা অস্বাভাবিক।
রক্ত ছড়িয়ে আছে, কিন্তু ছুরির কোনো চিহ্ন নেই।
আর সুদীপের মুখে যেন জমে আছে এক অদ্ভুত ঠাণ্ডা হাসি।
“এটা তো… অদ্ভুত ব্যাপার,” নিজের মনে ফিসফিস করলেন ঋদ্ধিমান।
রহস্য উন্মোচনের শুরু
পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করতেই ঋদ্ধিমান ফাইলটা তাদের হাতে তুলে দিলেন।
ফাইল খুলতেই সবাই চমকে উঠল—
ভেতরে যা লেখা আছে, ঠিক সেটাই ঘটেছে এই ঘরে!
একজন অফিসার বিস্ময়ে বলল,
“এটা কি তবে সত্যিই ভবিষ্যৎ থেকে আসা কোনো নথি?”

ঋদ্ধিমান চুপ করে দাঁড়ালেন।
তার মনে হচ্ছিল, না— এর মধ্যে মানুষের হাত আছে।
কেউ ইচ্ছা করেই এই ফাইল বানিয়েছে, আর সেই মতো খুনের নাটক সাজিয়েছে।
ফরেনসিক রিপোর্ট
পরের দিন ফরেনসিক রিপোর্ট এলো।
সবার অবাক হওয়ার মতো খবর—
সুদীপের শরীরে কোনো ছুরির ক্ষতই নেই, বরং তাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে!
তাহলে ফাইলে ছুরির কথা লেখা হলো কেন?
এমনকি ছবিতে স্পষ্ট ছুরির আঘাত দেখা যাচ্ছিল, অথচ বাস্তবে কিছুই নেই।
ঋদ্ধিমানের মাথায় হঠাৎ বিদ্যুতের মতো ঝলক দিল—
ফাইলটা আসলে আগে বানানো, যাতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
খুনি চেয়েছিল সবাই ভেবে নিক, এই খুন ঠেকানো যায় না, কারণ ভবিষ্যৎ আগে থেকেই লেখা।
আসল খুনি
সন্ধ্যার দিকে ঋদ্ধিমান সেই রহস্যময় অচেনা লোকটিকে আবার দেখতে পেলেন, ভিড়ের মধ্যে।
লোকটা শান্ত গলায় বলল,
“আমি তো আগেই বলেছিলাম— সবকিছু লেখা আছে।”
ঋদ্ধিমান এগিয়ে গিয়ে তার কাঁধে হাত রাখলেন।
চোখে বিদ্যুতের ঝলক নিয়ে বললেন,
“লেখা ছিল না, তুমি লিখেছিলে।
তুমিই এই ফাইল বানিয়েছো,
তুমিই পুরো নাটক সাজিয়েছো।”
লোকটা মুখ বাঁকিয়ে হেসে উঠল,
“ভালোই তো চালিয়েছিলাম খেলা… কিন্তু তুমি ধরেই ফেললে।”
ঋদ্ধিমান খুনিকে গ্রেপ্তার করালেন।
সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
কিন্তু খেলা এখানেই শেষ নয়—
খুনি শেষ মুহূর্তে ফিসফিস করে বলল,
“ওই ফাইলটা ভালো করে দেখো গোয়েন্দা… ওটার ভেতরে তোমার নামও লেখা আছে।”
ঋদ্ধিমানের বুক কেঁপে উঠল।
সত্যিই, ফাইলের শেষ পাতায় স্পষ্ট লেখা—
শিকারীর নাম: ঋদ্ধিমান সেন
মৃত্যুর তারিখ ও সময়: এক সপ্তাহ পর, রাত ১টা ৩৪ মিনিট
শেষ মোড়
অফিসের টেবিলে বসে কাঁপা হাতে ফাইলের শেষ পাতা পড়ছিলেন গোয়েন্দা ঋদ্ধিমান সেন।
শিকারীর নামের জায়গায় স্পষ্ট লেখা—
“ঋদ্ধিমান সেন”
মৃত্যুর তারিখ ও সময় : এক সপ্তাহ পর, রাত ১টা ৩৪ মিনিট
ঘড়ির কাঁটা যেন থমকে দাঁড়াল।
তার মাথায় ঝড় বয়ে গেল।
যেই সময়টায় তিনি প্রথম ফাইলটা হাতে পেয়েছিলেন,
সেই একই সময়েই লেখা আছে তার নিজের মৃত্যুর পূর্বাভাস!
সন্দেহের ছায়া
তিনি ভাবতে লাগলেন—
খুনি কি মিথ্যে বলছে, নাকি সত্যিই ভবিষ্যৎ আগে থেকে লেখা যায়?
না কি অন্য কোনো অদৃশ্য শক্তি এর পেছনে কাজ করছে?
ঋদ্ধিমান জানতেন, ফাইলটা নিছক কাকতাল নয়।
যে একবার সুদীপের মৃত্যুর খবর লিখেছিল, সেও একইভাবে তার মৃত্যু লিখে রেখেছে।⏳ সময়ের ফাঁদ
দিন গড়িয়ে যাচ্ছিল, আর প্রতিটি রাত ঋদ্ধিমানের মনে অদ্ভুত আতঙ্ক নামিয়ে আনছিল।
রাতের পর রাত তিনি খুনির দেওয়া প্রতিটি পাতা খুঁটিয়ে দেখলেন।
কোথাও কোনো ক্লু আছে কি?
কোনো ভুল?
কোনো অসতর্কতা?
কিন্তু পাতার শব্দগুলো যেন ঠাট্টা করে তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল—
“তুমি থামাতে পারবে না…”
শেষ রাত
অবশেষে সেই রাত এসে গেল।
রাত ১টা ৩০ বাজতেই বিদ্যুৎ চলে গেল গোটা এলাকায়।
অফিসের জানালায় ভেসে উঠল এক অচেনা ছায়া।
ঋদ্ধিমান বন্দুক হাতে এগোলেন।
কিন্তু দরজা খোলার মুহূর্তে দেখলেন— বাইরে কেউ নেই।
ফিরে তাকাতেই দেখলেন ফাইলটা টেবিলে নেই।
অদৃশ্য হয়ে গেছে!
ঠিক তখনই ঘড়িতে ১টা ৩৪ মিনিট বাজল।
বাতাসে ভেসে এল সেই পরিচিত ফিসফিস শব্দ—
“এবার তোমার পালা…”
ঘর নিস্তব্ধ।
ঋদ্ধিমানের বুক ধকধক করছে।
গল্প থেমে গেল এক অমীমাংসিত প্রশ্নে—
সত্যিই কি তিনি মারা গেলেন,
নাকি তিনি খুঁজে বের করতে পারবেন ভবিষ্যৎ বদলানোর গোপন রহস্য?